অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ সিলেট। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এই প্রাচীন জনপদটি বন, খনিজ ও মৎস্যসম্পাদনে সমৃদ্ধ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অক্ষয়। সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি ইতিহাসও রয়েছে। এছাড়াও সিলেটে বসবাসকারী বিভিন্ন উপজাতির বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে। চাবাগান, জাফলং, রাতারগুল জলাধার, হাকালুকি হাওর, লালাখাল, ভোলাগঞ্জ, বিছনাকান্দি, তামাবিল, পাহাড়, ঝর্ণা প্রভৃতি স্থান নিয়ে সিলেট দেশের একটি অন্যতম পর্যটন নগরীতে পরিণত হয়েছে।
মালনীছড়া চা বাগান বাংলাদেশ ও উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও প্রথম প্রতিষ্ঠিত চা বাগান যা সিলেট সদর উপজেলায় অবস্থিত। ১৮৪৯ সালে হার্ডসন সাহেবের হাত ধরে ১৫০০ একর জায়গা জুড়ে উপমহাদেশের প্রথম চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়। সিলেট বিমানবন্দর সড়কের পাশেই মালনীছড়া চা বাগানের অবস্থান। যারা ঘুরতে ভালোবাসেন তাদের প্রথম পছন্দের জায়গা মালনীছড়া চা বাগান। সিলেট শহর থেকে অনেক দূরে হওয়ায় চা বাগান দেখতে পর্যটকরা সবার আগে ছুটে আসেন মালনীছড়ায়।
জাফলং বাংলাদেশের সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ভারতের মেঘালয় সীমান্তবর্তী খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। দূর থেকে দেখলে মনে হবে পাহাড়গুলো আকাশে হেল দিয়ে বসে আছে। নরম মেঘ পাহাড়ের গায়ে ভেসে বেড়াচ্ছে। পিয়ানে নদীর তীরে স্তরযুক্ত শিলা গঠন জাফলংকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। সীমান্তের ওপারে ভারতীয় পাহাড়, ডাউকি পাহাড় থেকে একটানা জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, পাইন নদীর স্বচ্ছ হিমবাহের পানি, উঁচু পাহাড়ের ওপর ঘন জঙ্গল আর এলাকার নির্মল নিস্তব্ধতা পর্যটকদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করে। জাফলং সফর না হলে সিলেট যাত্রা অসম্পূর্ণ।
দেশের একমাত্র স্বীকৃত সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল সিলেটের গোয়াইনঘাট এলাকায় অবস্থিত। উত্তরে গোয়াইন নদী, দক্ষিণে গ্রেট হাওর। মাঝখানে ‘জল বন’ রাতারগুল, যা বাংলার আমাজন নামে পরিচিত। রাতারগুল সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। সিলেট শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে দেশের একমাত্র স্বীকৃত রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট। বিশাল ও সুন্দর এই বনের অধিকাংশ গাছপালা বছরের চার থেকে সাত মাস পানির নিচে থাকে যা পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম প্রধান একটি কারণ।
সিলেট শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত লালাখাল। ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখাল অবস্থিত। এই নদীটি চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। জায়গাটি প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে অনুভব করার জন্য উপযুক্ত। পাহাড়ের কোলে ঘন সবুজ অরণ্য, নদী, চা বাগান আর নানা ধরনের গাছপালা জুড়েই লালাখাল। পূর্ণিমায় যেতে পারলে জ্যোৎস্না ধোয়া নদীর আবির্ভাব সারা জীবন মনে রাখার মতো ঘটনা হয়ে থাকবে। লালাখাল নদীতে রয়েছে অসংখ্য বাঁক। প্রতিটি বাঁক দেখতে সুন্দর। পাহাড়ের দিকে তাকালে মনে হবে কেউ যেন নিজ হাতে একে একে সাজিয়ে রেখেছে।
দেশের একমাত্র স্বীকৃত সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল সিলেটের গোয়াইনঘাট এলাকায় অবস্থিত। উত্তরে গোয়াইন নদী, দক্ষিণে গ্রেট হাওর। মাঝখানে ‘জল বন’ রাতারগুল, যা বাংলার আমাজন নামে পরিচিত। রাতারগুল সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। সিলেট শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে দেশের একমাত্র স্বীকৃত রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট। বিশাল ও সুন্দর এই বনের অধিকাংশ গাছপালা বছরের চার থেকে সাত মাস পানির নিচে থাকে যা পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম প্রধান একটি কারণ।
সিলেট শহর থেকে বিছনাকান্দির বেশ দূরে। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত বিছনাকান্দি অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি! বিছনাকান্দিতে এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পাথর। যা দেখতে পাথরের বিছানার মতো মনে হবে। এ এক অপরূপ সৌন্দর্য। মেঘালয় রাজ্যের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণার পানিতে পা রাখলে মনে হয় পৃথিবীর সব শান্তি এখানেই। শুষ্ক মৌসুমে বিছনাকান্দির আসল সৌন্দর্য দেখা যায় না। বর্ষাকালে জলের স্রোত জায়গাটিকে মায়াবী করে তোলে। স্বচ্ছ শীতল পানির নিচে পাথরের পাশাপাশি নিজের শরীরের লোমও স্পষ্ট দেখা যায়। দীর্ঘক্ষণ পাথরের বিছানায় বসে থেকে, ছবি তুলে, গোসল করতে গিয়ে সময়ের হিসাব হারিয়ে ফেলতে পারেন। বিছনাকান্দির সৌন্দর্য অসাধারণ।
সবুজ পাহাড় আর টিলায় ঘেরা সিলেট জেলা প্রকৃতিতে অনন্য। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি তামাবিল। সিলেট-জাফলং সড়ক পথে চললে জাফলং থেকে ৫ কিলোমিটার পূর্বে তামাবিল পাবেন। সিলেট জেলা থেকে তামাবিলের দূরত্ব প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। তামাবিল মূলত বাংলাদেশের সিলেট ও ভারতের শিলংয়ের মধ্যবর্তী সীমান্ত সড়কের একটি পোস্ট।